মুহাম্মদ আবু সিদ্দিক ওসমানী :: মহেশখালী উপজেলা বিএনপির সভাপতি, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আবুবকর ছিদ্দিক এবং তার ভাই জেলা সেচ্ছাসেবক দলের সহ-সভাপতি আতা উল্লাহ বোখারীসহ ৪০ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। কক্সবাজারের মহেশখালী পৌরসভার ২০১৬ সালে নির্বাচনি সহিংসতায় নিহত রিকসা চালক আবদুশ শুক্কুর হত্যা মামলায় বৃহস্পতিবার ৩ অক্টোবর এই গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়।
মামলার বিবরনে প্রকাশ, ২০১৬ সালের ২০ মার্চ মহেশখালী পৌরসভার নির্বাচনে আওয়ামীলীগের প্রার্থী মকছুদ মিয়া ও নাগরিক কমিটির প্রার্থী সাবেক মেয়র সরওয়ার আজমের নারিকেল গাছ মার্কায় পক্ষে-বিপক্ষে ভোট দেওয়াকে কেন্দ্র করে গোরকঘাটা হিন্দুপাড়া ভোট কেন্দ্রে গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। এসময় বর্তমান মেয়র মকছুদ মিয়ার পক্ষের লোকজনের গুলিতে পুটিবিলা এলাকার রিকসা শ্রমিক আব্দুশ শুক্কুর নিহত হন। এ ঘটনায় আব্দুশ শুক্কুরের পিতা আবুল কাশেম বাদি হয়ে মহেশখালী থানায় ২৪ ই মার্চ একটি হত্যা মামলা রুজু করে। মামলা নম্বর -জি আর-৭৬/২০১৬।
সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান, মহেশখালী উপজেলা বিএনপির সভাপতি আবুবকর ছিদ্দিকসহ ৪১ জনের নামে দায়েরকৃত হওয়া এই হত্যা মামলাটি তৎকালীন তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই জহিরুল হক তদন্তকালে মামলাটি অধিকতর তদন্তের জন্য সিআইডির পুলিশ পরিদর্শক মোঃ জামাল উদ্দিনের নিকট হস্তান্তর করেন।
পরে তিনি মহেশখালী থানার চূড়ান্ত রিপোর্ট (এফআরটি) নং-৪১, তারিখ ০৫/০১/২০১৮ ইংরেজি মুলে এজাহারনামীয় আসামীদের মামলা দায় হইতে অবহ্যতি প্রদানের জন্য আদালতে প্রার্থনা করেন। সিআইডি কর্তৃক দাখিলকৃত প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে বাদী আবুল কাসেম আদালতে নারাজি দাখিল করেন। বিজ্ঞ আদালত নারাজির আবেদনটি শুনানি করে মামলাটি অধিকতর তদন্তের জন্য পিআইবি কক্সবাজার জোনকে নির্দেশ দেন। বহুল আলোচিত মামলাটি আদালতের নির্দেশক্রমে পিআইবির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ আব্দুল্লাহ আল-মামুন তদন্ত শেষে পুনরায় উক্ত মামলাটির এজাহারভুক্ত একজন আসামী মহিউদ্দীন বাশি মৃত্যুবরণ করায় মামলা থেকে তাকে অব্যহতি দিয়ে অপর ৪০ জনের বিরোদ্ধে গত ৩১ আগস্ট ১৪৩/৩২৩/৩০৭ /৩০২/১১৪ পেনাল কোড এ সার্জসীট দাখিল করেন। এ মামলাটি ৩ অক্টোবর মহেশখালী সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে বাদী ও বিবাদী উভয় পক্ষের আইনজীবীগণের শুনানী শেষে আদালত চার্জসীট গ্রহন করেন এবং ৪০ জন আসামীর বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানা জারী করেন। গ্রেফতারি পরোয়ানা জারিকৃত আসামিরা হলেন সাবেক চেয়ারম্যান আবু বক্কর ছিদ্দিক, তার ছেলে ফয়সাল, ভাই আতা উল্লাহ বোখারী, খাইছারুজ্জামান, ভাইপু ফরহাদ, শেহজাদ, জাহেদ, ভাগিনা, জাহাঙ্গীর, মামুন, নেছারের পুত্র আক্তার হোছাইন, মোঃ জহিরের পুত্র ছালামত উল্লাহ, সিরাজুল হকের পুত্র রফিকুল ইসলাম, আমিনুল ইসলাম ভুট্টু, দেলোয়ার, দক্ষিণ হিন্দুপাড়ার লিঠন দে, নুর হোসন, সুমন দাশ, ফরিদুল আলম প্রঃ কালা ফরিদ, ঘোনা পাড়ার সাইফুল, মনজুর আহমদ, জকরিয়া, ননি গোপাল দে, ডাক্তার দীলিপ দে, সিরাজ মিয়া, বদিউল আলম, সাইফুল্লাহ, জমির উদ্দীন, জালাল উদ্দীন, মঈন উদ্দীন, আবু নাছের, ইসলাম, দিদারুল ইসলাম, শফিউল আলম, সজল বডুয়া, সিরাজা মিয়া, মাহমুদুল্লাহ, ফোরকান, মঈন উদ্দীন, শামশু উদ্দীন, রিয়াজুল ইসলাম রিয়াজ সকলেই গোরকঘাটা সিকদার পাড়া, চরপাড়া, দক্ষিণ হিন্দু পাড়া এলাকার বাসিন্দা।
শুনানীতে আসামী পক্ষে আইনজীবী ছিলেন জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট ইকবালুর রশিদ সোহেল, এডভোকেট সালামত উল্লাহ রানা, এনামুল হক সিকদার, বাদী পক্ষের আইনজীবী ছিলেন এডভোকেট হামিদুল হক।
পাঠকের মতামত: